,

টুঙ্গিপাড়ায় প্রধান শিক্ষকের দূর্ব্যবহারে স্কুল বিমুখী শিক্ষার্থীরা

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯নং রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুনের কারণে স্কুল বয়কট করেছে শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া তার দুর্নীতি ও দুর্ব্যহারের অভিযোগে অপসারণ দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি চার দিন ধরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে প্রথম শ্রেনি থেকে পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত মোট ৩২২ জন শিক্ষার্থী ও পাঁচজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় সই করে চলে যান। এরপর শনিবার তিনি স্কুলে আসলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস না করে চলে যায়। তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করতেন। শিক্ষার্থীদের বহিরাগতদের দিয়ে মারধরও করেছেন। শিক্ষার্থীদের ফেল করানোসহ তার স্বেচ্ছাচারী ও খারাপ আচরণের কারণে অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে তাদের সন্তানদের অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। এছাড়া স্কুল সংস্কার, শিক্ষা উপকরণ ক্রয়সহ সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
উল্লেখ্য, প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন এক বছর পূর্বে এই স্কুলে কর্মরত ছিলেন। তার আচারণে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে শৃংখলা বজায় রাখতে তাকে ওই স্কুল থেকে সরিয়ে চরকুশলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবর্তন করা হয়।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থী মোস্তাক, জাহাঙ্গীর, আলম ও অপুসহ অনেকেই জানান, প্রধান শিক্ষিক তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। অন্যদের দিয়ে মারধোর করানো, তার কথা না শুনে চললে ফেল করায় এবং কিছু দিন পর পর বিভিন্ন অজুহাতে টাকা চাইতো।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও রেজাউল করিম বলেন, শনিবার থেকে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে স্কুলের আয়-ব্যয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষকের দ্বন্ধ রয়েছে।

অভিভাবক সাঈদুল শরীফ বলেন, ‘আমার মেয়ে সুরাইয়া খানম স্কুলে ফার্স্ট গার্ল ছিল। প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করান। বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে গেলে তিনি আমার স্ত্রী হাসিয়া বেগমের সঙ্গে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এতে আমি আমার মেয়েকে খুলনার একটি স্কুলে ভর্তি করিয়েছি।’

রামচন্দ্রপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গ্রামের কোনো মানুষই ফাতেমা খাতুনকে প্রধান শিক্ষক পদে দেখতে চায় না। তার আচরণে সবাই বিরক্ত। তাই তাকে অপসারণ করা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধের জেরে এই অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। তবে আমি বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করছি। তবে কেন এই বিরোধ সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।’

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, ‘পাঠদান শুরু করতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি, অভিভাবক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে পাঠদান শুরুর ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুনকে অন্য কোথাও বদলির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।’

এই বিভাগের আরও খবর